খান আব্বাস:
দেশে এই প্রথমবারের মত বিষাক্ত কালো ধোয়া বিহীন পরিবেশবান্ধব ডিজিটাল ইটের ভাটা তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উদ্ভাবক আলী হোসেন।
পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচতে ও পরিবেশ বান্ধব দেশ গড়ার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন গবেষণা করার পর উদ্ভাবক আলী হোসেন শতভাগ সফলতা লাভ করেন।
এছাড়া তার দাবী শুধু দেশেই নয় পুরো বিশ্বে এই প্রথমবারের মত ধোয়াবিহীন ইটের ভাটা তৈরি করেছেন তিনি।
আলী হোসেন নলছিটি উপজেলার চরকয়ার আলীনগর এলাকার মৃত আদম আলীর ছেলে।
২০১২ সালে সরকারি আইন অনুযায়ী জেলা প্রশাসক লাইসেন্সসহ আনুসঙ্গিক সকল কাগজপত্র সম্পাদন করে একটি ঝিঁকঝাঁক ইট ভাটা নির্মান করেন আলী হোসেন। এরপর তিনি দেখতে পান ইটের ভাটার ধোয়ায় আশেপাশের মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানুষজন শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। পরিবেশ দূষণ তথা কৃষিকাজে ব্যাঘাত ঘটছে, গাছপালা লালচে হয়ে যাচ্ছে ও মরে যাচ্ছে এবং পশুপাখিসহ সব ধরনের পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এমতাবস্থায় এসব ক্ষতিসাধণ থেকে মানুষ ও পরিবেশকে রক্ষা করতে চিন্তিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে আলী হোসেন দেশকে বাঁচাতে পরিবেশ দূষন থেকে দেশকে রক্ষা করতে ও পরিবেশ বান্ধন দেশ নির্মান করতে বিষাক্ত কালো ধোয়া বিহীন পরিবেশবান্ধব ডিজিটাল ইটের ভাটা তৈরি করতে গবেষণা শুরু করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত প্রায় বছরখানেক আগে তার পূর্বের নির্মিত ইটভাটার চিমনিসহ ইটের ভাটা ভেঙ্গে দেন।
লেআউট প্লান অনুযায়ী ইটেরভাটা তৈরি করেন ও ইটভাটা থেকে সাড়ে ৩শত ফুট লম্বা মাটির নিচ দিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড টার্নেল তৈরি করে টার্নেলের ভিতরে একটি ডিজিটাল পদ্ধতিতে ওয়াটার প্লান তৈরি করি। ওই টার্নেলের ভিতরে কালো ধোয়া ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিল্টারিং করা হয়। এভাবেই ডিজিটাল চিমনী দিয়ে দূষনমুক্ত সাদা বাতাস বের করে দিয়ে আলী হোসেন শতভাগ সফলতা লাভ করেন।
ইতিমধ্যে আলী হোসেনের পরিবেশবান্ধব ডিজিটাল ইটের ভাটা দেখতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে ভাটার মালিক ও পরিবেশবাদী সংগঠনসহ শতশত মানুষ ভীর জমাচ্ছেন। আগত ভাটার মালিকদের অধিকাংশরা এমন ধোয়া বিহীন পরিবেশবান্ধব ডিজিটাল ইটের ভাটা তৈরি করা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এমন একজন ইট ভাটার মালিক বলেন, দেশে এই প্রথমবারের মত কালো ধোয়বিহীন ডিজিটাল ইট ভাটা যদি সারা দেশে তৈরি করা যেত তবে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। এছাড়া ভাটার আশে পাশে থাকা মানুষ, কৃষি ও গাছ পালারও কোন ক্ষতি হবে না। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো উদ্যোগ।
উদ্ভাবক আলী হোসেন জানান, পরিবেশ দূষণ তথা কৃষিকাজে ব্যাঘাত, গাছপালা লালচে হয়ে যাওয়া ও মরে যাওয়া এবং পশুপাখিসহ সব ধরনের পরিবেশ বিপর্যস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণার পর বিষাক্ত কালো ধোয়া বিহীন পরিবেশবান্ধব ডিজিটাল ইটের ভাটা তৈরিতে আমি সফলতা লাভ করি। কালো ধোয়াবিহীন ডিজিটাল ইটের ভাটাটি পর্যবেক্ষণ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহায়তায় ভবিষ্যতে আরো ভালো ফলাফলের আশা করেন তিনি।
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, বিষাক্ত কালো ধোয়া বিহীন পরিবেশবান্ধব ডিজিটাল ইটের ভাটা এই প্রথমবারের মত আলী হোসেন তৈরি করেছেন। এমন উদ্যোগ দেশ ও দেশের বাইরে প্রথমবারের মত সফলতা পেয়েছে। পরিবেশ দূষণ থেকে রক্ষা পেতে আইনে এভাবেই বলা হয়েছে। যেটাতে আলী হোসেন শতভাগ সফলতা অর্জন করেছেন। তাকে সব ধরনের সহযোগীতা প্রদান করা হবে।